Saturday, June 3, 2023

আলোর ঝিলিক - শাহজাহান কবীর

 আলোর ঝিলিক 

শাহজাহান কবীর 


এই যে শনিবার 

তারপর আর কি-

শুধুই রবিবার

সোম,মঙ্গল, বুধ--

 বৃহস্পতি -শুক্র ---

এইতো তুমি, এইতো আমি 

দুলছি নিরর্থক শূন্যতায়

একগুঁয়েমির পেন্ডুলাম। 


বিদগ্ধ এই প্রান্তরে 

প্রসব আর পুনরাবৃত্তি

এই প্রবাহে  ঘটে কি আর

এই গ্রহটির ব্যাধি ছাড়া  ? 


হঠাৎ শেষে 

দাঁড়িয়ে  পথে 

ধূসর  চোখে

কি দেখা যায় -

সেই কুয়াসা 

সেই নিরুদ্দেশ ! 


আগে নয় কিছু 

পরেও নয় কিছু

অর্থহীনতাই ছুটছে

মহাশূন্যের পিছু। 


তবুও একটি অর্থ চাও ? 

জীবন খুলে দাঁড়িয়ে যাও

যা কিছু বিশ্বাস সবই অলিক

এই মানুষের ভালবাসা 

অন্ধকারে আলোর ঝিলিক।

Monday, May 29, 2023

আশ্রয় দাও- শাহজাহান কবীর



এতটা চমকে ওঠা কেন

চিরশিশু তোমাদের  ? 

এতটা লম্ফঝম্প কেন 

আজন্মকালের বামনেরা ? 

ভুজালি নিয়ে কেন দৌডাও

অবুঝ আততায়ীর দল  ? 


হাতেগোনা কিছু মানুষ থাকুক না

যারা পথহীন পথে হাঁটতে হাঁটতে 

অবলীলায় যাবেনা অন্ধ স্রোতের অরণ্যে । 


একবার তাদের আশ্রয় দিয়ে দেখ 

তোমার পাঁচ আংগুলের ছোট্ট হাতেই

ফুলের মত ফুটে উঠবে অসংখ্য পৃথিবী 

তোমার ক্ষীণ দৃষ্টির ছোট দুটো চোখই

হয়ে উঠবে বিগ ব্যাং দেখার মত দূরবীন !

Sunday, May 28, 2023

বাঙালির দিগভ্রান্তি এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুলইসলামের দায়

 বাঙালির দিগভ্রান্তি এবং 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  ও কাজী নজরুলের ইসলামের দায়


  -----শাহজাহান কবীর 


পাক- ভারত,বাংলাদেশ সাব-কন্টিন্যান্টের এক বিরাট দুর্ভাগ্য হলো ত্রিশের দশকের আগে এর শিল্প- সাহিত্যের  ভাগ্যাকাশে বিশ্ব আলোকিত করার মত অনেক নক্ষত্রের আবির্ভাব হলেও  অবশেষে সেইসব নক্ষত্রকে প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকারের ছায়ার নীচে করুনভাবে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। জীবনানন্দ দাসের মত ত্রিশের দশকের কবিদের হাত ধরে বাংলা কবিতায় আধুনিকতার প্রকৃত প্রকাশ ঘটে। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল যুগের কবিতার ভাবরসে আপ্লুত বাঙালি এই আধুনিক কবিতার আগমনে বিস্মিত এবং স্তম্ভিত হলেও ত্রিশের দশকের কবিগণ তাদের শ্রম ও সাধনায় অনড় থাকার ফলে আধুনিক কবিতাও বাংলা সাহিত্যে একটা জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়।আধুনিক কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য এর বিষয়বস্তুতে দৈবশক্তির বদলে ব্যক্তিসত্তার প্রকাশ।  তবে এই কবিতাকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে গ্রহণ করার মত অগ্রসর শিক্ষা ও চিন্তাচেতনায় সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগটি খুবই ক্ষীণ হওয়ার কারণে আধুনিক কবিতা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বজনীন হয়ে উঠতে পারেনি। যে কারণে বাঙালির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের  চিন্তা চেতনায় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের যুগের কবিদের জনপ্রিয় ধারার একশ্রেণীর কবিতাগুলোই এখন পর্যন্ত প্রভাবশালী কবিতা হিসাবে বিরাজ করছে। রবীন্দ্রনাথ যখন নোবেল পুরষ্কার পান নজরুল তখন সবে কিশোর কবি।বয়সের এই বিরাট পার্থক্য এবং সাহিত্যের শুদ্ধতা য মানদণ্ডের  মাপকাঠিতে বিরাট পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও হিন্দু মুসলিম দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের কারণে  দুই কবি দুই ভাবে গৃহীত হয়েছেন বলে দুই কবিকে দুইজনের প্রতিপক্ষ এবং সমকক্ষ ভাবার মত একটা বিভ্রান্তিকর চিন্তা  বাংলাদেশে প্রবল হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে নজরুল হয়ে উঠেন অনেকখানি মুসলমানের কবি এবং রবীন্দ্রনাথ  হয়ে উঠেন হিন্দুদের কবি।যদিও রবীন্দ্রনাথ নিজে হিন্দু ছিলেন না। এখন প্রশ্ন হলো এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার জন্য এই দুই কবির দায় কতটুকু। রবীন্দ্রনাথ এক সর্বব্যাপী বিশাল প্রতিভা। সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই প্রতিভার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটিয়েছেন তিনি। সংখ্যায় এবং  সাহিত্য মানে রবীন্দ্রনাথের রচনা সত্যই বিস্ময়কর এবং বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনের দাবীদার । অন্যদিকে সংখ্যায় এবং মানে কাজী নজরুল ইসলাম  রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তুল্য না হলেও বাংলা কবিতায়  আবেগ আর আলোড়নের  যে অভাবনীয় ঢেউ  তিনি তুলেছিলেন তাও বিশ্বে এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। দুই কবিই ছিলেন মানবতাবাদী। তথাপি তারা কেন হয়ে উঠলেন দুই সম্প্রদায়ের কবি। রবীন্দ্রনাথ এতবড় প্রতিভার অধিকারী হয়েও শৈশবে পারিবারিক পরিবেশ থেকে পাওয়া  এক নিরাকার ঈশ্বরের পূজা করে গেছেন তার কাব্য গানে। পূজা পর্বের গান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে রবীন্দ্রনাথের অনেক গান। যদিও রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর চিন্তা প্রচলিত ধার্মিকতা নয় কিন্তু বাঙালি সেটিকে প্রচলিত ধার্মিকতা হিসাবেই গ্রহণ করেছেন। দু:খের বিষয় রবীন্দ্র প্রতিভা বিকাশের জন্য এই ধরনের ভক্তিবাদের কোন প্রয়োজন ছিলনা।রবীন্দ্রনাথের মতই আরেক বিশাল প্রতিভা জার্মান কবি গ্যোটে। সার্বিক বিচারে তিনি রবীন্দ্রনাথের চেয়েও প্রভাবশালী সাহিত্য শিল্পী। গ্যোটে সারা জীবন চেষ্টা করেছেন শিল্পের সাথে বিজ্ঞানের একটা সমন্বয় ঘটানোর পক্ষান্তরে রবীন্দ্রনাথ সারাজীবন চেষ্টা করেছেন শিল্পের সঙ্গে ভক্তিবাদের সমন্বয় ঘটানোর। গ্যোটের কিন্তু   এত বড় সাহিত্য স্রষ্টা হওয়ার  হয়ে উঠার জন্য রবীন্দ্রনাথের মত ঈশ্বর পূজার প্রয়োজন হয়নি। যে  কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন " মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহিয়ান-সেই নজরুল ইসলামই রচনা করেছেন অসংখ্য ইসলামী ভক্তিবাদের গান। কখনো কখনো তার এই ভক্তিবাদ হাস্যকর পর্যায়ে নেমে গেছে। যদিও অনেকেই জ্ঞাত নন যে নজরুল ইসলামী গান রচনা শুরু করেছিলেন সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক কারণে।যখন শ্যামা সংগীতের বাজার ভাল ছিল তখন নজরুল অনেক শ্যামা সংগীতও রচনা করেছিলেন। কণ্ঠশিল্পী আব্বাসউদ্দীনের অনুরোধে তিনি ইসলামি গান রচনা শুরু করেছিলেন শ্যামা সংগীত রচনার পরে। পরে ইসলামী গান ব্যাপক বাজার পেয়ে গেলে নজরুল প্রচুর ইসলামী গান লিখেন রুটিরুজির জন্য।কিন্তু বাঙালি মুসলমান তাকে এই ইসলামী গানের প্রাচুর্যের কারণে ইসলামের কবি বা মুসলমানদের কবি হিসাবেই গ্রহণ করেছেন। এই যে স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পরেও বাঙালি একটি চরম সাম্প্রদায়িক জাতি হয়ে উঠেছে  সেটি হয়ে ওঠার রসদ কিন্তু তারা অন্যান্য উৎস থেকে যেমন গ্রহণ করেছে তেমনি এই দুই প্রভাবশালী কবির ভক্তিবাদ থেকেও গ্রহণ করেছে। ত্রিশের কবিদের প্রভাব বাঙালির মধ্যে ব্যাপক ভাবে পড়লে অবশ্যই ভিন্ন বাস্তবতার সৃষ্টি হতো। সুতরাং এই যে  বাঙালি আজও একটি উন্নত জাতি হয়ে  ওঠার মত শিক্ষা, সমাজ এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থা পেলো না এবং চলার পথে জাতি হিসাবে তার এই যে হতাশা জনক  দিগভ্রান্তি এতে অবশ্যই আমাদের এই দুই কবির দায় অস্বীকার করার উপায় নেই।

Friday, May 5, 2023

মিথোলজিক্যাল রোবট - শাহজাহান কবীর

মানুষ কি মিথোলজিক্যাল রোবট?  বিশেষ করে বাংলাদেশের মত কিছু  দেশের জনগণের  বিষয়ে এই প্রশ্নটি উঠতেই পারে।রোবট শব্দটি এসেছে  চেক শব্দ রোবোটা থেকে। রোবোটা শব্দের বাংলা হচ্ছে মানুষের দাসত্ব। অর্থাৎ  কম্পিউটার  নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত যন্ত্র মানবকে বলা হয় রোবট যা  মানুষ দাস হিসাবে কাজ করে।  সাতচল্লিশ থেকে দুই হজার তেইশ প্রায় ছিয়াত্তর  বছরে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় যে বাস্তবতা তৈরী হয়েছে তাতে এই প্রশ্নটি খুব জোরালোভাবে উত্থাপন করা যায় যে এদেশের  মানুষ কি মানবিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষ  আছে নাকি এই বিপুল জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই মিথোলজিক্যাল রোবটে পরিণত হয়েছে? প্রশ্নটি নিয়ে কথা বলার সুবিধার্থে চলুন রোবট সম্পর্কে কিঞ্চিৎ জেনে নিয়ে মানুষ এবং রোবটের মধ্যে একটা তুলনামূলক আলোচনার চেষ্টা করি। রোবটের প্রধান দুইটি অংশ। স্পর্শযোগ্য কাঠামো বা হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার। প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে রোবটেরও মানুষের মত কৃত্রিম ব্রেইন তৈরি করা হয়। সেই ব্রেইনে রোবটের স্রষ্টার দ্বারা তৈরি করা  প্রোগ্রামিং বা তথ্য-উপাত্ত সম্পন্ন সফটওয়্যার ইনপুট করা থাকে। রোবট নির্মাতার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য অনুযায়ী প্রোগ্রামিং সেট করা হয় এবং  ডিরেকশন অনুযায়ী রোবট তার নির্ধারিত কাজগুলো  করে। রোবট নামক এই যন্ত্র মানবের সঙ্গে  মানুষের  পার্থক্য হলো মানুষ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি আর রোবট মানুষের সৃষ্টি। দ্বিতীয় পার্থক্য হলো মানুষ বংশ বৃদ্ধি করতে পারে কিন্তু রোবট যেহেতু কৃত্রিম যন্ত্র তাই রোবট বংশ বৃদ্ধি করতে পারে না।আরও বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে,  তবে এই পার্থক্যগুলো একেবারেই মোটা দাগের এবং  স্বাভাবিক। মানুষের সাথে রোবটের প্রধান পার্থক্যগুলো হচ্ছে মানুষের রয়েছে অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন মস্তিষ্ক, মানুষ নিরন্তর বিকাশমান   চিন্তাশক্তির অধিকারী , অভিজ্ঞতা সঞ্চয়কারী অনুভূতি প্রবণ এবং সর্বোপরি   সৃষ্টিশীল এক  প্রাণী।শেষোক্ত বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলীই রোবটের মানুষের চেয়ে উচ্চতর অবস্থান নির্ণয় করে। বিশেষ করে মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা এবং নিজেকে বিকশিত করার অব্যাহত ইচ্ছা - এই দুটি প্রবণতা যদি কোন কারণে থেমে যায় বা বাধাগ্রস্ত হয় তবে তার সৃষ্টিশীলতাও অনিবার্যভাবে বন্ধ হয়ে যায়।চিন্তাশক্তি রহিত মানুষ অবিকশিত অবস্থায় যখন বেড়ে উঠে তখন তার  মধ্যে সৃষ্টিশীলতার বদলে  দেখা দেয়  অন্যের চাপিয়ে দেয়া বিশ্বাসকে যুক্তিহীনভাবে গ্রহণ করার প্রবণতা।তার অগভীর মনন উচ্চতর, উৎকৃষ্ট বা মননশীল কিছুকে গ্রহণ করতে পারেনা। নানান কুসংস্কার, বিচিত্র ধরনের অপবিশ্বাস খুব সহজেই তখন মানুষকে আকৃষ্ট এবং মোহগ্রস্ত করে ফেলে।এই ধরনের  মানুষের সকল সম্ভাবনা তখন  এক গভীর মোহান্ধতার বৃত্তাবর্তে বন্দী হয়ে যায়। এই  অচলায়তন ভেঙ্গে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে  নিজেকে স্থুল চিন্তা থেকে মুক্ত করে যুক্তি জ্ঞানের বিকাশ ও বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে ওঠা তারপক্ষে আর কোনদিনই সম্ভব হয়ে উঠেনা। চরম সম্ভাবনাময় গুণাবলি নিয়ে জন্ম নেয়া মানুষ তখন হয়ে উঠে রোবটের ন্যায় মিথলজির প্রচারকদের ইচ্ছার পুতুল। সচেতন সত্তা নিয়ে জন্ম নিয়েও অচেতন যান্ত্রিক মানবের মত সমাজের কতিপয় সুবিধাভোগী ধূর্ত মানুষের দাসে পরিণত হয় সে। তার অবিকশিত চেতনায় অন্যের দ্বারা ইনপুট করা কিছু মিথলজিক্যাল স্টরি, কিছু আদি ভৌতিক পৌরাণিক   বিষয়বস্তু  হয়ে উঠে তার চিন্তার সামগ্রী এবং এইসব চিন্তাক্লিষ্ট পরিপ্রেক্ষিতের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা জীবনাচরণই তাদের সীমাবদ্ধ কর্মপরিধি। কিছু  মিথলজিক্যাল ক্যারেক্টার হয়ে উঠে  তার আরাধ্য অলৌকিক শক্তি। সেইসব কল্পিত চরিত্রের মিথ যারা তাদের হীন স্বার্থে প্রচার করে তারাই হয়ে উঠে অবিকশিত জনগোষ্ঠীর অনুকরণ যোগ্য আদর্শ। শুধুমাত্র প্রজনন ব্যতিত এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে রোবোটিক চরিত্রের বাইরে আর বিশেষকিছু পরিলক্ষিত হয় না।বাংলাদেশের বর্তমান যে জনগোষ্ঠীর বিস্তার ঘটেছে এই জনগোষ্ঠীকে মিথলজিক্যাল রোবট ছাড়া অন্য কোন পরিচয়ে পরিচিত করা যাবেনা। কল্পিত পৌরাণিক গল্পগাঁথায় এরা নিজেদের অস্তিত্ব এমনভাবে বিলীন করে দিচ্ছে যে এদের মানুষ হিসাবে যে এদের একটা মানবিক পরিচয় আছে সেটাই যেন বেমালুম ভুলে গিয়েছে। দুই হাজার তেইশ  সালেও এরা এদের চিন্তা ডুবিয়ে রেখেছে প্রাগৈতিহাসিক  কল্পপুরীর অন্ধকারে। পরিবার থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান,  সমাজ,  রাষ্ট্র ও শিক্ষা ব্যবস্থা এতটাই পশ্চাৎপদ,এতটাই অধোগামী যে মিথলজি ছাড়া আর কোন কিছুইকেই এরা রিসিভ করতে চায়না।  আদি ভৌতিক গল্পগাঁথা, আর মিথলজিক্যল চরিত্রগুলোর প্রতি এরা এতটাই আকৃষ্ট এ বিষয় কেউ বিন্দু মাত্র ভিন্ন মত প্রকাশ করলে এরা উত্তেজনায় উন্মাদ হয়ে উঠে।এদের নিজের কোন কথা নেই,কোন ভাবনা নেই,নিজস্ব কোন বোধ শক্তি নেই, যুক্তি নেই,বিবেচনা নেই, হাজার বছর ধরে যে বিশ্বাস এদের ভিতর ইনপুট করা হয়েছে সেই বিশ্বাসের বাইরে আর একটি কথাও এরা শুনতে চায়না। যেন এরা সব জীবন্ত রোবট,যেন এরা মিথলজিক্যাল চরিত্রগুলোর দাসত্ব করছে,যেন ঘোরগ্রস্ত,নেশাগ্রস্ত, কতিপয় ধুরন্ধর লোকের নির্দেশে কেবলই সে আউটপুট দিচ্ছে যা এই ধুরন্ধরেরা এদের মেমোরিতে ইনপুট করেছে। এই মিথলজিক্যাল রোবট জনতা নিয়ে কোন গন্তব্যে যাবে বাংলাদেশ? 



Tuesday, May 2, 2023

মিথলজির সাম্রাজ্য। শাহজাহান কবীর

 মানবজাতির জন্য  সর্বোচ্চ সত্য ও নির্ভেজাল দুটি শব্দ হলো - "আমি জানিনা "। এই 'আমি জানিনা' শব্দ দুটি যারা মেনে নিয়েছে তারাই জ্ঞান অর্জন করেছে,  তারাই সাজিয়েছে পৃথিবী। তারাই সৃষ্ঠি করেছে বিজ্ঞান, দর্শন, শিল্প ও সাহিত্য। কিন্তু পৃথিবীর এক শ্রেণীর প্রতারকের দল মানুষের অজানার সত্যকে ঢেকে দিয়ে নিজেদের স্বার্থে সৃষ্টি করেছে কিছু অলৌকিক মিথলজি। সৃষ্টি করেছে কিছু সুপার পাওয়ার সম্পন্ন  কল্পিত চরিত্র। এইসব মিথলজির গল্পের বেড়াজালে  সেই প্রাচীনকালেই তারা অবিকশিত সহজ - সরল মানুষকে  খুব সহজেই আটকে ফেলতে সক্ষম হয়।  মিথলজির অলৌকিক গল্পে রয়েছে কল্পিত চরিত্র সমূহ এবং তাদের সুপার পাওয়ারকে বিশ্বাস করার জন্য মানুষকে ভয় এবং লোভ দেখানোর প্রবনতা। যে কারণে  পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই ভয়ে আতংকে এবং লোভে  সুপার পাওয়ার সম্পন্ন চরিত্রে ও কল্পকাহিনীর মোহে আটকে যায়।  কালক্রমে এইসব মিথলজি তাদের কাছে হয়ে উঠে পরম বিশ্বাসের বিষয়বস্তু। একেক জনপদের একেক রকম মিথলজির প্রচার হওয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সৃষ্টি হয় ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বাস। এবং প্রতিটি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ই যার যার বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে পরস্পরের শত্রু হয়ে উঠে। নিজের অজ্ঞতাকে আবিষ্কার করতে না পেরে প্রতিটি বিশ্বাসী সম্প্রদায় মিথলজির কারাগারে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। এদিকে পৃথিবীর শাসকেরা সেই প্রাচীনকালেই বুঝতে পারে যে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার একটি বিরাট উপায় হচ্ছে বিপূল জনগোষ্ঠীকে মিথলজির গল্পের মাধ্যমে  অন্ধ করে রাখা। যে কারণে শাসক গোষ্ঠী মিথলজি প্রচারকারী সন্তদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিতে থাকে এবং মিথলজির কল্পকাহিনীকে জনমনে চিরস্থায়ী করার জন্য মিথলজিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে থাকে। সারা পৃথিবীজুড়ে গড়ে উঠে মিথলজির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান - ভজনালয় ইত্যাদি। মিথলজি সন্তরা সমাজে সম্মানিত হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। শাসক ও পুঁজিবাদী শ্রেণী মিথলজির প্রতিনিধিত্ব করার কারণে পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ আর বের হতে পারলোনা তাদের সীমাবদ্ধতা থেকে। বিজ্ঞান, দর্শন, শিল্প সাহিত্য থেকে পাওয়া প্রাপ্তিগুলো তারা জীবনের সর্বত্র ব্যবহার করলেও তারা এগুলোকে তাদের প্রতিপক্ষ ভাবে।একারণে তারা তাদের গন্ডি থেকে বের হতে পারলোনা। পৃথিবী ভরে গেল মিথলজিতে বিশ্বাসী অন্ধ জনতায়। পৃথিবী পরিপূর্ণ হয়ে  গেল হিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায়,অনাচার অপরাধ,  অসত্য আর অশান্তিতে। পৃথিবী হয়ে উঠলো পরোক্ষভাবে মিথলজির কল্পিত চরিত্রগুলীর সাম্রাজ্য এবং প্রত্যক্ষ ভাবে সেইসব কল্পিত চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করা সন্তরাই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করে তাদের রাজত্ব। এই রাজত্ব সমূহের শক্তি যেহেতু অসত্য অলৌকিক বিষয়বস্তু সেহেতু এইসব রাজত্বের অবসান ঘটানো বিজ্ঞানী,দার্শনিক বা শিল্পী সাহিত্যের পক্ষে খুবই কঠিন। কারণ এই যুদ্ধটাতো মানুষের সাথে নয়  মানুষের ভিতর  শেকড় ছড়ানো  অন্ধকারাচ্ছন্ন মহিরুহের বিরুদ্ধে।  আমরা জানি মানুষের মুক্তির রাস্তা একটাই     " আমি জানিনা " এই সত্যের ছত্রছায়ায় সবাই মিলিত হওয়া। কিন্তু মিথলজির করাল গ্রাস থেকে কোনদিন কি বেরুতে পারবে পৃথিবীর বিপুল জনগোষ্ঠী?

Monday, May 1, 2023

বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান-রাজনীতি ও বুদ্ধিজীবীদের দায় -শাহজাহান কবীর

 বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান -

 রাজনীতি ও বুদ্ধিজীবীদের দায় 

    

   শাহজাহান কবীর 

সুলেখক আনিসুল হক তার একটি নিবন্ধে  যথার্থই লিখেছিলেন  -" "বাংলাদেশের মানুষের পরাজয় নেই কারণ তার সংস্কৃতি আছে। " তিনি এই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করতে পেরেছেন এই কারণেই যে আমাদের সংস্কৃতির চরিত্র বৈশিষ্ট্যটি তিনি জানেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও  সংস্কৃতি কখনোই মৌলবাদ ও উগ্রবাদের জন্য অনুকূল ছিলনা। বাংলার এই সংস্কৃতির ভিত্তি বা উৎস কোন ধর্ম নয় বরং লোকায়ত চিন্তা ও ভাবাদর্শের উপর  ভিত্তি করে মানবতাবাদী ও উদারচিন্তার গভীর থেকে প্রজন্ম পরম্পরায় গড়ে উঠেছিল আমাদের সংস্কৃতি। সেই চর্যাপদের যুগ থেকেই ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক  বিষয়ে সম্প্রীতি, সহাবস্থান ও সহমর্মিতার এক  উদারনৈতিক আদর্শের সড়ক ধরেই  সমৃদ্ধ এক সংস্কৃতি বিস্তার লাভ করেছে আমাদের এই ভূখন্ডে। বৌদ্ধধর্ম ও শ্রীচৈতন্য দেবের সহজিয়া মতবাদ এবং মুসলিম সুফীবাদ এই তিনটি উদারপন্থী মতবাদের সরল পন্থায় আকৃষ্ট হয়েই বাংলার জনগণ ধর্মীয় উগ্রবাদের বিপরীতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির বিকাশকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেছিল।এই সংস্কৃতিতে  আধ্যাত্মিকতা বা ধর্মীয় ভক্তিবাদ থাকলেও এর প্রাণপ্রবাহের মূলে ছিল ভ্রাতৃত্ববোধ,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদারচিন্তা।বাঙালি সংস্কৃতির গভীরের দাবীটি সবমসময়ই  ছিল সর্বোপরি আনন্দ এবং সাম্প্রদায়িক  সম্প্রীতির।সম্প্রদায় ভিত্তিক বিশ্বাস বা ধর্মাচরণ কখনোই এই সম্প্রীতির পথে বাধা হিসাবে দাঁড়াতে পারেনি। বাংলাদেশের বাউল সম্প্রদায় মানতাবাদী এই ভাবধারার প্রচার ও প্রসারে বিরাট ভূমিকা রাখেন। সেই সাথে  যাত্রা,জারি সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি  মুর্শিদী গান ও আরও নানারকম লোকসংস্কৃতি ও লোকাচারের  মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতির এই সুন্দর ও সরল চরিত্রটির শেকড় ক্রমশ আমাদের জাতীয়  চেতনার গভীরে বিস্তৃত হয়। বৃটিশ শাসনের একটা পর্যায়ে উনিশ শতকে এসে হিন্দুত্ববাদের জাগরণের একটা প্রচেষ্টা শুরু হয় যার প্রবক্তা ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। একই সময় ওহাবী ও ফরায়েজি আন্দোলনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মীয় ভাবধারার জাগরণের একটা চেষ্টা করা হয়। তবে এইসব আন্দোলন সমূহে ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মীয় আচার ভাবধারার প্রকাশ ঘটানোর চেষ্টা থাকলেও অবশেষে এদের আন্দোলন  মূলত বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনেরই রূপ লাভ করে।  সাতচল্লিশের দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে হিন্দু মুসলমানের আলাদা ভূখণ্ডের চিন্তার মাধ্যমে  আমাদের সংস্কৃতিতে  ধর্মীয় ভাবধারাকে প্রধান করে তোলার যে চেষ্টা শুরু হয় তার মূল কারণটি ছিল রাজনৈতিক - ধর্মীয় নয়। সাতচল্লিশ পরবর্তীতে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি  ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক রূপে আবির্ভূত হয়  এবং  রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলার  চিরায়ত সংস্কৃতির উপর ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের যে আন্দোলন গড়ে উঠে সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা -এই দুটি দাবীই  সমানভাবে প্রবল হয়ে উঠে। একারণেই একাত্তরের মুক্তি সংগ্রাম  সকল সম্প্রদায়ের  মিলিত শক্তির  স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আবেদন ও আবেগ মিশ্রিত হয়ে একটি সর্বাত্বক জনযুদ্ধের রূপ লাভ করে। রাজনীতির সঙ্গে আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতির  তীব্র আবেগ  যুক্ত হয়েছিল বলেই আমাদের মুক্তিযুক্ত স্বাধীনতার পথে এতটা দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছিল। একাত্তর পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যা,ব্যারাক থেকে উঠে আসা সামরিক শাসকদের মাধ্যমে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে যে অস্থিরতা এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় সৃষ্টি হয় সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে একাত্তরের পরাজিত  সাম্প্রদায়িক  রাষ্ট্রটি তাদের এদেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিরন্তন উদারপন্থী সংস্কৃতির উপর উগ্রবাদ প্রতিস্থাপন করার একটা তোড়জোড় অপচেষ্টা  চালায়। বাংলাদেশের সামরিক শাসকেরা এই সময়টাতে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে থাকে তাকে এক কথায় বলা চলে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রাজনীতি। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এই রাজনীতির সহায়ক শক্তি হিসাবে সামরিক শাসকেরা ধর্মীয় উগ্রবাদীদের প্রথমে প্রশ্রয় দেয় এবং ক্রমশ তাদের লালন পালনের দায়িত্ব নেয়। রাষ্ট্র ও রাজনীতি অবতীর্ণ হয় ধর্মীয় উগ্রবাদ বিস্তারের  প্রধান সহায়কের ভূমিকায়। যদিও বাংলাদেশের এই ধর্মীয় উগ্রতার রফতানি কারক পাকিস্তানের সহায়তায় আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশসমূহ তবে মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মীয় উগ্রতার সাথে বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রতার একটি বড় ধরনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মীয় উগ্রতার মর্মে রয়েছে তাদের জাতীয়তাবাদ এবং পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের তীব্র বিরোধিতা। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের উগ্রবাদের লক্ষ্য  পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরোধিতা যেমন নয় তেমন জাতীয়তাবাদও নয় বরং  বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও বাংলার চিরন্তন সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচারণই বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রতার লক্ষ্যে পরিনত হয়। সে কারণেই এদেশের  মৌলবাদীদের সব সময়ই বাংলার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে ধবংস করার উদ্দেশ্যেই তৎপর থাকতে দেখা যায়। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিগণই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠে। সেনা শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান কতৃক সংবিধান থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ অপসারণ করে বাংলাদেশী জাতীয়তাদ সংযোজন, জয়বাংলার বদলে পাকিস্তান জিন্দাবাদের অনুকরণে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানের সৃষ্টি, স্বাধীনতার বিরোধীদের ধর্মীয় রাজনীতি করার সুযোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে জেনারেল জিয়া সাম্প্রদায়িক অপশক্তির একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক হিসাবে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন এবং উগ্রবাদীরা দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে অসাম্প্রদায়িক উদারচিন্তার বাঙালী সংস্কৃতি ধবংস করার কর্মতৎপরতা শক্তিশালী করে তুলতে থাকে। জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম  ঘোষণা দিয়ে বুঝিয়ে দেন যে এদেশ এখন  উগ্রবাদীদের অভয়ারণ্য। এই যখন বাস্তবতা তখন আওয়ামীলীগ তাদের নীতি আদর্শের বিপরীত পন্থা অবলম্বন করে সেই সময়কার সরকার বিরোধী আন্দোলনে জামাতের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা স্থাপন  করে এবং জামাতের সঙ্গে একই মঞ্চে সরকার বিরোধী জনসভায় অংশ নেয়।আওয়ামীলীগের এই আদর্শিক বিচ্যুতি  সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে অধিকতর সাহসী  করে তুলে । পরবর্তীতে  খালেদা জিয়ার নেতৃতাধীন বি  এন পি'র রাজনীতির একমাত্র ভিত্তি হয়ে উঠে এদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি। বি এন পির শরীক দল হিসাবে স্বাধীনতা বিপক্ষ শক্তি সরাসরি এদেশের ক্ষমতায় অবতীর্ণ হয় এবং মূলত দেশ পরিচালিত হতে থাকে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির নির্দেশে। এমন অবারিত সুযোগে  উগ্রবাদ তার ব্যপক বিস্তার ঘটাবে এটাইতো স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। মমধ্যপ্রাচ্যে এবং এদেশীয় পাকিস্তানপন্থী কোটিপতিদের আর্থিক সহায়তায়  উগ্রবাদ ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সর্বত্র তার শেকড় ছড়িয়ে দেয়। এর ফলশ্রুতিতে দেশব্যাপী শুরু হয় উগ্রতার নৈরাজ্য।  একই দিনে সিরিজ বোমাবাজিসহ,রমনার বটমূল,উদীচির মঞ্চ, সিনেমা হল, যাত্রা ও সার্কাসের প্যান্ডেলে একের পর এক বোমাহামলা চালায় উগ্রবাদীরা। বাউলমেলায় আক্রমণ, বাউলদের ভিঠেছাড়ার করা সহ সর্বত্র  শিল্প ও শিল্পীদের উপর চড়াও হয় তারা।   দেশজুড়ে সংস্কৃতিকর্মীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে দেয় এসব নাশকতা।যাত্রাদল গুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হয়। স্থানীয় ভাবে সার্কাস, পালাগান ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। স্থানীয় থানাপুলিশ নাশকতা হওয়ার অজুহাতে গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে অনুমতি দেয়া বন্ধ করে দেয়। আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত সংস্কৃতি এবং সাংস্কৃতিক চর্চা চরমভাবে ব্যহত হতে থাকে। গ্রামীণ জনজীবনে  চিরচেনা সাংস্কৃতিক চেহারাটি দ্রুত বদলে যেতে থাকে। যাত্রা,সার্কাস,বাউল গান পালাগান, জারিগান, গ্রামীণ মেলা ইত্যাদির জায়গা দখল করে নেয় বিভিন্ন  ধর্মীয় মাহফিল আর বিচিত্র ধরনের পীর ও মাজারের কর্মকাণ্ড।উগ্রবাদ উত্থানের এই  প্রেক্ষাপট রচিত হতে কিন্তু খুব বেশী সময় লাগেনি।পঁচাত্তর পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই নিদারুণ বাস্তবতার তৈরি হয়েছে। এরশাদ শাসনের অবসানের পর বি এন পি ক্ষমতায় এসে তাদের পছন্দের পথেই তারা হেঁটেছে। বি এন পি পর ক্ষমতায় আসে মুক্তি যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের ক্ষমতার ঐ  টার্মে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রকাশ্যভাবে প্রশ্রয় দিতে দেখা যায়নি কিন্তু পরবর্তী টার্মে ক্ষমতায় এসে অদ্যাবধি  এই দলটিকে মৌলবাদীদের কর্ম তৎপরতার কাছে অনেকটা অসহায় বলে প্রতিয়মান হয়েছে।যদিও তারা জঙ্গীবাদী কর্মকান্ড অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তীতে বি এন পি জামাতের হাত ধরে শক্তিশালী হয়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির  বিস্তার রোধে  আওয়ামীলীগ সরকারের কোন কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি বরং প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে  এই বিস্তারকে আওয়ামীলীগ সরকার পৃষ্ঠপোষকতাই করেছে বলা যায়।  আমরা জানি  ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আওয়ামীলীগও বি এন পির মত ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকেই তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির যে করুন অবস্থা তাতে আওয়ামীলীগ এই পন্থা গ্রহণে অনেকখানিই বাধ্য হয়েছে বলেই ধরে নেয়া যায়।সুতরাং বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির  উগ্রবাদের এই অবস্থা  তৈরির জন্য আমাদের অসৎ রাজনীতি বা রাজনৈতিক দৈন্যদশা তথা রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করার হীন প্রবণতা  যে প্রবল ভাবে দায়ী সে কথা বলাই বাহুল্য। এখন প্রশ্ন হলো  সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ বিস্তারের এই বাস্তবতায়  বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সমাজের ভূমিকা, কার্যক্রম ও সফলতা এতটা হতশাজনক কেন? সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে একটি কার্যকর সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে আমাদের বুদ্ধিগণ ব্যর্থ হলেন কেন?  ঘাদানিকের পর বুদ্ধিজীবীগণ  এতটা নিস্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা আজ খুবই জরুরি। দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিস্তার প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য  বি এন পি জামাতের জোট সরকারকে না পারলেও আওয়ামীলীগ সরকারের উপর বুদ্ধিজীবী গণ কেন সম্মিলিত  একটি চাপ প্রয়োগ করলেন না? উগ্রবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার সাংস্কৃতিক আন্দোলন সৃষ্টি করার মত অনেক ইস্যুইতো বুদ্ধিজীবীদের সামনে সৃষ্টি হয়েছে। ড: হুমায়ুন আজাদের উপর উগ্রবাদীদের হামলাকে  সরাসরি

বুদ্ধিজীবীদের উপর আক্রমণ বলে গণ্য করা যায়।এই ধরনের নির্মম কর্মকাণ্ডের পরও কেন আমাদের বুদ্ধিজীবীগণ দায়সারা নিন্দা জানিয়ে  তাদের দায়িত্ব শেষ করলেন?  কেন লাগাতার একটি আন্দোলন গড়ে তোলার তাগিদ তারা অনুভব করলেন না। তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে যখন উগ্রবাদীরা ভয়ানক শক্তি নিয়ে আস্ফালন করলো বুদ্ধিজীবিরা তখন দায়সারা গোছের কিছু বিবৃতি দিয়ে রনে ভঙ্গ দিলেন?  কেন তারা  উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নামেন নি? কেন তারা উপলব্ধি করতে চাইলেন না যে, ভিন্নমতের উপর উগ্রবাদীদের আক্রমণ  এইদেশের শিল্প সাহিত্য তথা সংস্কৃতির উপর বড় এক হুমকি ? একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে আমরা দেখেছি প্রজন্ম একাত্তর নামে তরুণ সমাজ শাহবাগের মোড়ে এক যুগান্তকারী আন্দোলন করতে সমর্থ হয়েছে।সেই আন্দোলনের আমাদের বুদ্ধিজীবীদেরও নীরব সমর্থন ছিল। এই বিষয়টি দেখার পর বুদ্ধিজীবী সমাজ কেন কেন  দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ও উগ্রতার বিরুদ্ধে অনুরূপ কোন সাংগঠনিক আন্দোলন গড়ে তুলেন নি? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যেমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তেমনি মৌলবাদের উত্থানের মধ্য দিয়ে  বাঙালি জাতীর সংস্কৃতি ধবংসের ষড়যন্ত্রও কি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়? সরকার যখন মৌলবাদীদের খুশী করার জন্য ধর্মানুভুতিতে আঘাত নামে মুক্তচিন্তার পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে সংবিধানের বাক স্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক একটি কালো আইন প্রণয়ন করলো তখন বুদ্ধিজীবী গণ কেন এর প্রতিবাদ করলেন না? 

এই আইন বাতিলের জন্য কেন তাদের কোন কার্যক্রম জাতি দেখতে পেলোনা? আমাদের বুদ্ধিজীবীগণ কি সরকারের মত উগ্রবাদের ভয়ে ভীত নাকি তারা এসব নিয়ে কাজ করে সরকারের অপ্রিয় হতে চান না?  নাকি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কাজ না করে নিজেদের একটা নির্ভেজাল অবস্থানে রাখতে চাইছেন তারা ?  তারা কি সরকারের কাছে অপাঙতেয়? তারা কি  চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন? সেদিন নাট্যজন মামুনুর রশীদকে বলতে শুনলাম যে "এই সরকার মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমরা জানি এই বক্তব্য মামুনুর রশীদ সাহেবের একার নয়। তার কথায় আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজের বা সুশীল সমাজের সাধারণ মতামতেরই প্রতিফলন ঘটেছে। তাহলে কি ব্যাপারটা এমন যে, বুক ভরা হতাশা নিয়ে  নিজের অক্ষমতার বেদনায় আমাদের দায়িত্বশীল  মহান ব্যাক্তিগণ আজ তাদের চোখকে বলছেন দেখ,কানকে বলছেন শোন। তারা আজ অসহায় দর্শক ছাড়া আর বিশেষ কোন ভূমিকায় যেতে পারছেন না।  এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে কি বলবেন বুদ্ধিজীবী গণ তা আমরা জানিনা। আমরা শুধু জানি, এই দিন থাকবেনা - নতুন দিন আসবে। সেই নতুন দিনের মানুষের কাছে আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজ আজকের দিনের দায় এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ইতিহাস আমাদের সামনে প্রশ্নবোধক আঙুল তুলে দাঁড়াবেই।

Tuesday, April 25, 2023

কভিড- ফিলিংস - ( ভয়াবহ এক ভাইরাস) -শাহজাহান কবীর


 শুরুতেই সবিনয়ে নিবেদন করিতেছি যে, এই 'কভিড -ফিলিংস'  ভাইরাস মহাশয়ের বিবরণ আমি যথাসম্ভব সাধু ভাষায় বিবৃত করিবার চেষ্টা করিব। কেননা আমার  এইরূপ আশংকা হইতেছে যে চলতি ভাষার মত চটুল ও সহজ কথায়  এই ভাইরাস মহয়াশয়ের  বিবরণ আপনাদের সম্মুখে দিতে গেলে ভাইরাস মহাশয় তাহার ফিলিংসে আঘাত করিবার দরুন স্বয়ং  ক্রোধান্বিত হইতে পারেন। তাই তাহার প্রতি যথাসম্ভব উঁচুদরের সম্মান প্রদর্শন পূর্বক যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখিয়া আপনাদের সম্মুখে তাহার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলিয়া ধরিতেছি।শুরুতেই আপনাদের অবগতির জন্য জানাইতেছি যে " কভিড- ফিলিংস মহাশয় ভাইরাস হইলেও কভিড- নাইন্টিন বা অমিক্রনের সঙ্গে ইহার যথেষ্ট পার্থক্য রহিয়াছে। কভিড- নাইন্টিন বা অমিক্রন  পরিত্যাজ্য  জীবাণু। এই দুইয়ের দ্বারা আক্রান্ত দেশগুলোর সরকার তাহাদের  চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্বারা এবং প্রতিরোধক টীকা  প্রয়োগের মাধ্যমে এই দুই ভাইরাসকে বিতাড়িত করিবার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাইয়া যাইতেছে । পক্ষান্তরে 'কভিড- ফিলিংস' ভাইরাস যেসব দেশকে আক্রান্ত করিয়াছে সেইসব দেশের সরকার তাহার সকল বিভাগ লইয়া এই ভাইরাস মহাশয়কে বাঁচাইয়া রাখিবার সর্ব প্রকারের প্রচেষ্টায় নিয়জিত রহিয়াছে এবং এই ভাইরাস মহাশয় যেন আরও দ্বিগুণ, তিনগুণ শক্তিশালী হইয়া দেশের আপামর জনতাকে তীব্রভাবে আক্রান্ত করিতে পারে তাহার সুব্যবস্থার জন্য সেইসব রাষ্ট্র অতিশয় মনোযোগী হইয়া যাবতীয় কর্মতৎপরতা চালাইয়া যাইতেছে। আরও অধিকতর এবং বিস্ময়কর একটি ব্যাপার হইল এই যে, জগতে এমন একটি দেশ আছে যে দেশে " কভিড- ফিলিংস ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করিবার কাজে একদল সন্ত নিয়োজিত রহিয়াছে  । সেই সন্ত মহাশয় গণ কভিড- ফিলিংস ভাইরাস ছড়াইয়া দিবার কর্মকে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করিবার মহান পেশা হিসাবে গ্রহণ করিয়াছে। তাহারা সেই দেশের জনতার মাঝে  এই ধারণার জন্ম দিতে সক্ষম হইয়াছে যে " কভিড - ফিলিংস ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া একটি অতিশয় পূণ্যের কাজ।যে কারণে সেই দেশের জনতার কাছে এই ভাইরাস একটি অতিশয় পূজনীয় ও আরাধ্য  বিষয় হইয়া উঠিয়াছে।উইপোকা যেমন  অন্ধত্বের কারণে জলন্ত অগ্নিতে ঝাঁপ দিয়া পড়িয়া আত্মাহুতি দেয় তেমন সেই দেশের জনতা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হইবার আকুল আকাঙ্খা লইয়া  দিকবিদিকজ্ঞানশূন্য হইয়া দলে দলে  ছুটিয়া বেড়াইতেছে। অবস্থা  এমন হইয়াছে যে সেই দেশের ভিন্ন সম্প্রদায়ের কতিপয়  লোকজন  এখন তাহাদের অতি প্রয়োজনীয় বাক্যলাপ করিতেও ভীত সন্ত্রস্ত হইয়া থাকে এই কারণে যে মনের ভুলে আবার কোন বাক্য বা বাক্যাংশ এমন বেফাঁস হইয়া যায় কিনা যাহতে  কভিড- ফিলিংস মহাশয় আবার আঘাত প্রাপ্ত হইয়া ক্ষ্যাপিয়া উঠে। কেবল এইসব কতিপয়ের কাছেই এই ভাইরাস একটি ভয়াবহ আতংক হইয়া দাঁড়াইয়াছে। তাই এই দুর্ভাগা কতিপয় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে তাহারা বাঁচিয়া থাকিতে আর বাক্যালাপ করিবেনা। কারণ তাহারা বিলক্ষণ স্বচোক্ষে অবলোকন করিয়াছে যে  - তাহাদের মধ্যে কেউ কেউ বেফাঁস বাক্যালাপ করিয়া  কভিড- ফিলিংস মহাশয়কে অসম্মান করার অপরাধে ইতোমধ্যে নানারকম ন্যক্কারজনক শাস্তিতে নিপতিত হইয়াছে।অতএব সাবধান!  অতিশয় সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক। যদ্যপি এই একটি বিষয়ের  ফিলিংসের প্রতি অতিশয় আসক্তি জন্মাইবার দরুন কথিত সেই দেশের জনতার দেহাভ্যন্তরস্থ অন্যান্য সকল ফিলিংস ইতোমধ্যে ভোতা বা সম্পূর্ণ অকেজো হইয়া গিয়াছে তথাপি তাহারা কভিড- ফিলিংসকে তাহাদের মাথার মনি হিসাবেই মান্য করিয়া লইয়াছে। ইহাতে কথিত সেই দেশটির জনতার মধ্যে যে বিশাল একটি সংখ্যা রহিয়াছে যাহাদের মধ্যে কতক ঘুষ খাইয়া জীবন ধারণ করে, কতক  দুর্নীতি করিয়া বিত্ত বৈভবের পাহাড় গড়িয়া লয়, কতক আছে অবৈধভাবে পণ্য মজুত করিয়া, বাজার সিন্ডিকেট সৃষ্টি করিয়া জনতার অর্থ লুটপাট করিয়া নিজেদের ফুলাইয়া ফাঁপাইয়া তুলিতেছে। এবং আরও কতক আছে যাহারা ক্রমাগত নারী নির্যাতন, বলৎকার করিয়া মাস্তি মৌজ করিয়া সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর দিয়া তাহাদের অসৎ জীবন তরতর করিয়া আরামসে চালাইয়া লইয়া যাইতেছে সেইসব লোকদের মনে  বিন্দু পরিমানও ভয়ভীতি জাগ্রত হইতেছেনা। কারণ তাহাদের ইত্যাকার অপকর্মে সেই দেশের জনতার কোন ফিলিংকেই  কখনোই স্পর্শ করিতে পারে না।অর্থাৎ  কভিড- ফিলিংস ছাড়া অন্যকোন রকম ফিলিংস তাহাদের থাকুক ইহা মনের ভুলেও সেই দেশের জনগণ প্রত্যাশা করে না। অতএব জয়তু কভিড- ফিলিংস !  জিতে রহো! 

আলোর ঝিলিক - শাহজাহান কবীর

 আলোর ঝিলিক  শাহজাহান কবীর  এই যে শনিবার  তারপর আর কি- শুধুই রবিবার সোম,মঙ্গল, বুধ--  বৃহস্পতি -শুক্র --- এইতো তুমি, এইতো আমি  দুলছি নিরর্থক...